বসে যাওয়া চাকা

যখন শরীর ছাড়া আর নিজের বলতে কিচ্ছু নেই..
তখন ঘরের ভিতর জায়গা কমে আসে। বারবার মনে হয় এইটুকুই বা কেন? মুছে যাক‌। ঘর তখন বারবার মনে করায় এও তোমার জায়গা নয়।
তোমার আসলে কোনো জায়গাই নয়। কারণ তুমিই কেউ নও। এই কেউ নও হবার মজা হল, তোমার কান্না শোনা যাবেনা। তুমি হাসলে পাতাও নড়বেনা। তখন তুমি সততই থতমত, কথা বলতেই ভয়। কী জানি কী ভুল হয়ে যায়‌। আসলে তখন বারবার বলায় প্রতিষ্ঠিত যে তুমি যুক্তি শেখোনি। তাই তোমার কথা বলা বা না বলা সমান। কিংবা বুঝে গেছো, তুমি শুনলেই ভালো। কারণ অপরে তোমায় বলতে চায় শুধুই। শুনতে তো আসেনি।
যদি বলো ভয় করছে, জানবে অমন অনেকের করে। কাজ করে ভয় কাটাও। যদি বলো মন খারাপ, জানবে মনকে বেশী গুরুত্ব দিতে নেই। কাজ, কাজই বাঁচাবে। এবার যদি বলো তোমার বাইরে কাজ জুটছেনা, ঘরের কাজ বহুবার করা শেষ‌..তখন শুনবে অন্য কাজ খুঁজে নাও। সে করলেও গভীর রাতে যখন সবার সব বলা শেষ‌, যে যার অভ্যাসে ঘুমোচ্ছে, তুমি একলা বিছানায় ‌অতল অন্ধকারে বসে ভাববে, রাত আর মৃত্যু একই রঙের কিনা। তবে দুজনের আসা যাওয়া ঠিক একরকম নয়। রাত হলে তোমার ভয় করে। অবশ করা ভয়‌। কারণ তুমি দেখেছ, রাত হলেই দিন হয়। দিনকে তুমি ভয় পাও বহুদিন হলো। কাউকে বলোনি, বললেই আবার কাজের কথা বলবে। তুমি ধরো তদ্দিনে মনে মনে মরে গিয়ে শুধু একখানা গা। তোমার গা গুলিয়ে উঠছে আরেকটা নতুন দিনের কথা ভাবলেই। কিন্তু মৃত্যু ভাবলেই আরাম। শেষ। তার আর আগামী কাল হবেনা। মরে যাওয়া তোমার চিরদিনের আজ হয়ে থাকবে।
ডিপ্রেশন এমনই জিনিস। বারবারই দিনের শেষে মৃত্যুচিন্তা আসে। সবাই বলে কাজ করলে মন ঠিক থাকে। মন না থাকলে ঠিক কী করলে সব ঠিক থাকে কেউ বলেনা। এ লড়াই অবিরাম, আর সবসময়ই নিশ্চিত হার। এই টেনে চলার রং রাতের মতন, মৃত্যুর মতন, ঘোর কালো। দিনমণি তাদের তুমি মুকুব করো, পায়ে পড়ি। বাঁচতে পারছেনা ভয়ে, মরবার আস্হা কেড়ে নিওনা। কোথাও একটা নিজের জায়গা আছে, কোথাও তো আছে... 

Comments

Popular Posts